দেখার দৃষ্টিকোণ

 ...যে-কোনও চিন্তা আপনাকে তেজস্বী করে ,তাহাই গ্রহণ করিতে হইবে; এবং যাহা দুর্বল করে, তাহাই পরিত্যাগ করিতে হইবে। 

                                                                                                                                                                             -স্বামী বিবেকানন্দ 

বন্ধুরা, 

আসুন আজকে একটু গল্প করি। আপনাদের একটা গল্প শোনাই । 
কোন এক সময়। বিদেশের এক জুতো কোম্পানির মালিক তাঁর ব্যবসা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই মত কোম্পানির ম্যানেজারকে ভাবনা চিন্তা করতে বলেন। 
ম্যানেজার ভাবনা চিন্তা করে দেখেন যে তাঁর দেশে নতুন ভাবে জুতো বিক্রির সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। তিনি সিন্ধান্ত নেন, জুতো বিক্রি বাড়াতে গেলে'; নতুন বাজার খুঁজতে হবে। 
সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে, তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নতুন বাজার খুঁজতে বিভিন্ন দেশে কোম্পানির প্রতিনিধি পাঠানোহবে। সেইমত আমাদের দেশেও প্রতিনিধি পাঠান। 
কোম্পানির প্রতিনিধিগণ দেশে এসে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। গ্রাম,আধা শহর, শহর বাসে ট্রেনে ভ্রমণ করেন। সাধারণ লোকজন ,সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। বোঝার চেষ্টা করেন জুতো ব্যবহারের চাহিদা। 
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ শেষে, নিজের দেশে ফিরে যান; এবং কোম্পনির ম্যানেজারকে রিপোর্ট করেন যে এই দেশে জুতো বিক্রির কোনো সম্ভাবনা নাই। কারণ এই দেশে প্রায় ৯৯% লোক জুতো ব্যবহার করেন না। পায়ে জুতো দেওয়ার প্রয়োজন বা অভ্যাস নাই । 
ম্যানেজার রিপোর্ট দেখেন। কিন্তু সন্তুষ্ট হন না। তিনি সিদ্ধান্ত নেন। পুনরায় সেই সব দেশে নতুন প্রতিনিধি পাঠাবেন।

সেইমত নতুন প্রতিনিধি পাঠান। নতুন প্রতিনিধিরাও আগেকার প্রতিনিধিদের মত বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করেন এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।

দেশে ফিরে ম্যানেজারকে রিপোর্ট করেন যে এই দেশে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে জুতো বিক্রির। কারণ এই দেশে অধিকাংশ লোক জুতো পরেন না। জুতো পরার অভ্যাস নাই। বলা ভালো জুতো ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না । 

ম্যানেজার কোম্পানি মালিককে সেই মত রিপোর্ট করেন ও সিদ্ধান্ত নেন ভারতবর্ষে জুতোর দোকান দেবেন। সেইমত বিভিন্ন শহর আধা শহরে দোকান খোলার ব্যবস্থা করেন। 
তারপর পায়ে জুতো পরার উপকারিতা সম্বন্ধে ব্যাপক প্রচার করান। এমনকি কোথাও কোথাও লোকদের বিনামূল্যে, সল্পমূল্যে জুতো বিতরণ বা বিক্রি করান। 
ধীরে ধীরে লোকজনের মধ্যে পায়ে জুতো পরার অভ্যাস গড়ে উঠে। বলা ভাল জুতো ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। কেননা ততদিনে পায়ের তালু নরম হয়ে পড়েছে। ফলে খালি পায়ে যেভাবে, আগে অনায়াসে চলাফেরা করতে পারত, বর্তমানে পারছে না।তাই  জুতো ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে এবং কিনতেও বাধ্য হচ্ছে।

ফলস্বরূপ কোম্পানি এক বিশাল বাজার হাতে পেল, এবং জুতো বিক্রি বাড়িয়ে চলল। 

তাই বন্ধুরা, পরিবেশ পরিস্থিতি বিচার করুন। সব সময় পজিটিভ থাকুন। কেবল সম্ভাবনার দিক গুলো খুঁজে চলুন। 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কি

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কেন করব

ট্রাডিশনাল মার্কেটিং ব্যবস্থা