সফলতার জন্য

ন্ধুরা,

সফল কে না হতে চাই।  আমরা প্রত্যেকেই জীবনে সফল হতে চাই। যে, যে ক্ষেত্রেই  আমরা কাজ করি না কেন। সেখানেই সর্বচ্চো স্থানে পৌছাতে চাই। এই চাওয়া বা প্রত্যাশা দোষের কিছু  না।  বরঞ্চ এই খিদেটাই আমাদের ভালো। আরোও  ভালো। কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যেতে। সব সময় অনুপ্রেরণা যোগায়। 

কিন্তু প্রত্যেক সফলতা কুরবানী প্রত্যাশা করে। কুরবানী দিতে হয় সখ, আল্লাদ, আমোদ, প্রমোদ ফালতু অবকাশ জীবন যাপন। সেটাই আমরা দিতে কুন্ঠিত হয়। আমরা জীবনে কোনো ত্যাগ শিকার না করেই সফলতা পেতে চাই। এবং তাও  অতি শীঘ্র। আমাদের ধর্য্য সহিংসুতা কম।  আমরা ধর্য্যের সঙ্গে অপেক্ষা করতে চাই না। আর এখানেই যত গন্ডগোল!

আসুন। আরও  একবার গুরু শিষ্যের গল্পটা স্মরণ করি। 

এক শিষ্য। একদিন গুরুদেবের আশ্রমে আসে।  গুরুদেব কুশল বিনিময়ের পর। শিষ্যকে  জিজ্ঞেস  করে। জপ্ তপ চলছে কিরূপ।  আধ্যাতিক পথে কতদূর এগুনো গেলো।

শিষ্য একটু ইতস্তত করতে থাকে। গুরুদেব অভয় দেন । শিষ্য বলে - সব কিছু ঠিক ঠাক  চলছে গুরুদেব।  কিন্তু এখনো সেইরূপ কোনো উন্নতি বুঝতে পারছি না। বা উন্নতি হচ্ছে না। শিষ্যের কথায়  আক্ষেপ বা না পাওয়ার দুঃখ ঝরে পড়ে। গুরুদেব বললেন- ঠিক আছে হবে হবে।  সব নিয়মিত ভাবে চালিয়ে যাও। এবং তার সঙ্গে এটাও বললেন যে - যাও এখন আশ্রমের বিশ্রাম কক্ষে গিয়ে বিশ্রাম কর।  পরে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব। 

শিষ্য গুরুদেবের কথামত তাই করে। আশ্রমে বিশ্রাম নিতে থাকে। গুরুদেব অন্যান্য কাজ  ও শিষ্যদের সঙ্গে কথা বলে তিনিও বিশ্রাম নিতে যান। 

বিকেল বেলা। গুরুদেব শিষ্যকে ডেকে পাঠায়।  শিষ্য তার নিকট এলে গুরুদেব চলতে শুরু করে। এবং ইশারায় শিষ্যকে অনুসরণ করতে বলেন।  শিষ্য যথারীতি গুরুদেবের পিছন পিছন অনুসরণ করে চলতে থাকে। 

শিষ্য বুঝতে পারে না। গুরুদেব তাঁকে  নিয়ে কোথায় চলেছেন। বিনা বাক্যব্যয়ে অনুসরণ করে চলে। শিষ্য দেখে সামনে এক নদী।  গুরুদেব জলের মধ্যে নেমে ক্রমশ হাঁটু জল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আরো গভীরে যেতে থাকে। শিষ্যও হাঁটু জল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। গুরুদেব আরো গভীরে। কোমর জল অবধি পৌঁছে  যায়। শিষ্যও সেখানে পৌঁছে। 

শিষ্য কোন কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই। গুরুদেব জোর করে শিষ্যের ঘাড় ধরে শিষ্যের মাথা জলের মধ্যে চুবিয়ে ধরে। শিষ্য প্রথমত হতভম্ব হয়ে পড়ে। গুরুদেব তাঁকে নিয়ে কি করছে। কি করতে চাই। বুঝে উঠতে পারে না। 

গুরুদেব শিষ্যের মাথা জলের মধ্যে চুবিয়ে রাখে। কিছু সময় পর। শিষ্যের দম বন্ধ হবার উপক্রম হয়।সর্বশক্তি নিয়ে ,সে তার মাথা উপরে তোলার চেস্টা করে। যেহেতু গুরুদেব শিষ্যের থেকে বেশি বলবান। তাই সফল হয় না। 

গুরুদেব জোর করে মাথা চুবিয়ে রাখে। শিষ্য জলের মধ্যে আঁকুপাঁকু করতে থাকে। কিন্তু জলের উপর মাথা তুলতে পারে না। আরোও কিছু মুহূর্ত পরে। গুরুদেব শিষ্যের মাথাটা জলের উপরে তোলে। এবং ডাঙ্গায় নিয়ে আসে। 

শিষ্য একটু ধাতস্থ হওয়ার পর। গুরুদেব তাঁকে জিজ্ঞেস করে- জলের মধ্যে তোমার মাথাটা চুবিয়ে রাখার  সময় তোমার কেমন মনে হচ্ছিল। 

শিষ্য বলে - কি বলবো গুরুদেব। মনে হচ্ছিলো প্রানটা আঁকুপাঁকু করছিল। মনে হচ্ছিল, এই বুঝি প্রাণটা বেরিয়ে যায় ,বেরিয়ে গেল। 

গুরুদেব তখন শিষ্যকে বলে - সফল হবার জন্য। সফলতা পেতে গেলে। এইরূপ ছটপট করতে হবে।  লেগে থাকতে হবে। যতক্ষন পর্যন্ত না সফলতা আসে।  



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ