নমস্কার বন্ধুরা,

আজকে আমরা আলোচনা করি কিভাবে লক্ষ্য অর্জন করবো বা এচিভ করবো এই বিষয় নিয়ে। কেননা আমরা সকলেই লক্ষ্য ঠিক করি কিন্তু সঠিক পদক্ষেপ বা কৌশল না জানার ফলে সফল হাতে পারি না। তাই বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কৌশল গুলো নিয়েই আলোচনা করা যাক।
- এক সময় একটা লক্ষ্য নির্বাচন করুন। এবং সেই লক্ষ্য অর্জন করার উপর কাজ করুন। গুরু দ্রোণাচার্যের অস্ত্র শিক্ষার শেষে। রাজকুমারদের অস্ত্র শিক্ষার পরীক্ষা এবং শিষ্য অর্জুনের কেবল পাখির চোখকেই দেখা এবং লক্ষ্যভেদ করার গল্পটা আমরা প্রায় সকলেই শুনেছি।
অর্থাৎ কোনো বিশেষ বস্তু বা লক্ষ্যের উপর ফোকাস করা;মনকে কেন্দ্রীভূত, একাগ্র করা।
- এক ব্যক্তি রাস্তার ধারে। এক দীঘিতে ছিপ ফেলে মাছ ধরতে বসেছিল। রাস্তা দিয়ে এক বরযাত্রী ভীষণ শব্দ করে বাজনা বাদ্যি সহকারে রাস্তা দিয়ে পার হয়ে গেলে। মাছ শিকারী বুঝতেও পারলো না; তার পাশ দিয়ে বাজনাবদ্যি সহকারে একদল বরযাত্রী চলে গেলো।
কিছুক্ষন পরে এক পথিক মাছ শিকারির কাছে এসে জিজ্ঞাসা করে, ভাই গ্রামের অমুক লোকের বাড়িটা কোনদিকে। কোনদিক দিয়ে যাওয়া যাবে। শিকারী কোনো উত্তর দেয় না। পথিক বার বার জিজ্ঞাসা করে অমুক লোকের বাড়িটা কোনদিকে; শিকারী কোনো উত্তর দেয় না। কেবল একদৃষ্টে ছিপের ফাতনার দিকেই তাকিয়ে থাকে। ফাতনা কখনো ডুবে আবার পরক্ষনেই উপরে ওঠে। শিকারী শিকারের উত্তেজনায় একাকার; এইভাবেই কিছু সময় ধরে চলতে থাকে। শিকারী উত্তেজনায় বিভোর হয়ে থাকে।এবং অবশেষে ছিপে গেঁথে মাছটি আড়ায় তোলে।
মাছটি আড়ায় তোলার পর খেয়াল করে, কেউ যেন তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসা করছিলো। সে দেখতে পায় ওই দূরে একজন পথিক হেঁটে যাচ্ছে। তখন সে ছুটতে শুরু করে এবং পথিকের কাছে পৌঁছে জিজ্ঞাসা করে ভাই, তখন তুমি কিছু বলছিলে। পথিক বলে ওঠে। আর কি বলবো ভাই, তখন তোমার কাছে জানতে চাইছিলাম, গ্রামের অমুক লোকের বাড়িটা কোনদিকে। তা তুমি তো কোনো উত্তর দিলে না। মাছ শিকারী বলে ওঠে আরে ভাই, তখন আমি কিভাবে তোমার কথা শুনি, তখন যে আমার ছিপের ফাতনা ডুবছিলো। তা এই হচ্ছে ফোকাস বা মনকে কেন্দ্রীভূত করা।
- দিন প্রতিদিনের জন্য লক্ষ্য বানান। যেমন -
আমি এবং আমার টীম সমেত প্রতিদিন লিস্ট ধরে কমপক্ষে ১০ জন গেস্টকে বিজনেস সেমিনার যোগদান করার জন্য আমন্ত্রণ জানাবো। ১৫-২০ জনের সঙ্গে বিজিনেস প্ল্যান শেয়ার করবো বা দেখাবো।এবং ৪-৬ জনকে বিজিনেসে জয়েন করাবো।
- লক্ষ্য নির্ধারণ সুস্পট ও পরিষ্কার হবে। যেমন -১-২ বছরের মধ্যে আমি ডায়মন্ড লেভেলে পৌঁছাব। অথবা ২০০০ জনের সক্রিয় টীম বানাব। অথবা প্রতিমাসে ১-২ লাখ টাকা ইনকাম করব।
- নির্ধারিত লক্ষ্যকে অতি অবশ্যই নিজের হাতে খাতায় লিখা প্রয়োজন। কেননা বাংলাতে একটা প্রচলিত কথা আছে। কালি কলম মন লিখে তিন জন। অর্থাৎ নিজের হাতে খাতাতে লিখলে মস্তিষ্কে স্থায়ীভাবে ছাপ পড়ে।
- নির্ধারিত লক্ষ্যকে প্রতিদিন স্মরণ করা প্রয়োজন। তাই প্রতিদিন ৫-৭ বার পড়তে হবে ,যাতে লক্ষ্য বার বার পড়ার ফলে শরীর মনে অনুরণন হতে থাকে। যেমন আমরা ছাত্রাবস্থায় পড়া মনে রাখার জন্য বার বার পড়েছি বা পড়া রিভাইজ করে থাকি।
- দিনের শেষে প্রতিদিনের নির্ধারিত কাজ মূল্যায়ন করুন। আজকের টার্গেট কি ছিল। কতটা পূরণ হলো। না হলে, কেন হলো না। ভুল বা ঘাটতি কোথায় ছিল। এবং তা কিভাবে সংশোধন করা যায়। সেটাও ঠিক করে নিতে হবে।
- নিয়মিতভাবে দৈনন্দিন বাজারে (মার্কেটে) উপস্থিত হতে হবে। লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলতে হবে। বোঝাতে হবে। আমিও ডাইরেক্ট সেলিং ইন্ডাস্ট্রিতে আছি।
- নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে কি কি বাধার মুখোমুখী হচ্ছি। যা আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে। তা খুঁজে বার করা। এবং সেই মত এগিয়ে চলার কৌশল বের করে এগিয়ে চলা।
বন্ধুরা,আপনাদের কি মেনে হয়।
0 মন্তব্যসমূহ