Winner Mindset

নমস্কার বন্ধুরা ! আশাকরি সকলেই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। 

বন্ধুরা। আমরা অনেক সময় পরিচিত বন্ধু বান্ধব যাদের সঙ্গে ছোটবেলা কাটছে। এক সঙ্গে পড়াশুনা। এক রকম আর্থিক অবস্থা। মোটামুটি এক পরিবেশে বড় হওয়া সত্বেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেউ জীবনে অনেক বড় হয় সফল হয়। আবার অন্যদিকে কেউ কেউ অতি সাধারণ ভাবে জীবন যাপন করে জীবন অতিবাহিত করে। 

এখানেই আসে মাইন্ডসেট। চ্যালেঞ্জ নেবার মানসিকতা। যে জীবনে চ্যালেঞ্জ নেয়। সেই ব্যক্তিই আগে বেড়ে যায়। হতে পারে চ্যালেঞ্জের পথ কঠিন। কার্পেট বিছানো না। অপরদিকে যে বা যারা চ্যালেঞ্জ নিতে ভয় পায়।  পিছিয়ে আসে। সেই ব্যক্তি সাধারণত পিছনে থেকে যায়। এই যে মানসিকতার প্রার্থক্য। এই প্রার্থক্যই  একজন ব্যক্তিকে অপর ব্যক্তি থেকে পৃথক করে। ব্যক্তিটির জীবনে সফলতা বা বিফলতা এনে দেয়। 

আসুন এক গল্পের মাধ্যমে আরো একটু ভালো ভাবে বোঝার চেষ্টা করি। যদু ও মধু দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধু। একই রকম পরিবেশ ও আর্থিক অবস্থায় বেড়ে ওঠা। একই স্কুলে পড়াশুনা। পড়াশুনায় দুজনেই মোটামুটি একই রকম। 

পড়াশুনা শেষ করে নিজের নিজের সংসার জীবনে ফিরে যায়। কিন্তু দুজনেই কিছু কাজ করব। পৃথক পৃথক ভাবে এই চেষ্টা করে চলে। কিন্তু অনেক খোঁজ খবর করা সত্বেও মনোমত কোনো কাজ খুঁজে পায় না। জীবনে কিছু করার স্বপ্ন ভেঙে পড়ে।  

দুই বন্ধু হতাশ হয়। একদিন এক সঙ্গে বসে পরস্পরের জীবন সংগ্রামের গল্প নিয়ে আলোচনা করতে থাকে। আলোচনা চলাকালীন যদু বলে ওঠে। ভাই মধু - এক কাজ করা যাক। দুজনেই তো কাজের সন্ধান করলাম। কিন্তু পছন্দ মত কাজ তো পেলাম না। তাহলে শুধু শুধু বসে না থেকে। দুজনে মিলে এক ব্যবসা শুরু করা যাক। মধু তৎক্ষণাৎ বলে ওঠে - বা ভালো বলেছো তো। আইডিয়াটা মন্দ নয়। কি ব্যবসা করা যায় বল তো? 

অনেক ভেবে  চিনতে  যদু প্রস্তাব দেয় -  চল। আমরা দুজনে মিলে দুধের ব্যবসা করি। মধু অতি উৎসাহের সঙ্গে জানতে চাই কিভাবে ? যদু উত্তর দেয় - গো পালন করে। ধরা যাক প্রথম ধাপে দুজনে পুঁজি লাগিয়ে একটি গাভী কেনা হল। এবং এই গাভিটিকে ভালো ভাবে পালন করে। যে দুধ পাওয়া যাবে। সেই দুধ বিক্রি করে। যে অর্থ আসবে। সেই অর্থ দিয়ে অন্য আরো একটি গাভী কেনা হবে। সেই গাভীর  দুধ বিক্রি করে আরো একটা গাভী নেওয়া হবে। এই ভাবে ব্যবসা বাড়তে থাকবে। ধীরে ধীরে আমরা এক সময় এক বড় ডেয়ারির মালিক হব।

ব্যবসা বুদ্ধিটা মধুর ভালো লাগে। এবং ব্যবসাটা শুরু করার জন্য দুজনেই একমত হয়। তবু নিজের নিজের বাড়িতে একবার আলোচনা করে নেওয়া দরকার। এবং সেই দিনের মত। দুজনেই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যায়। 

বাড়িতে ফিরে মধু  তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করে। তাঁর স্ত্রী মন দিয়ে বিষয়টা শুনে। এবং শেষে বলে ওঠে - ব্যবসা তো ভালো। এই ভাবে চালাতে পারলে। একদিন ভালো ব্যবসা গড়ে উঠবে। কিন্তু প্রথম যে গাভীটি নিয়ে শুরু করতে চাও। সেই গাভীটি যদি কোন কারনে মারা পড়ে। তাহলে কি হবে ! মধু ভেবে নেয়। তাই তো! এরকম হতেই পারে। তাহলে তো ব্যবসাটা সম্পূর্ণ ভাবে শেষ হয়ে যাবে। মধু সিদ্ধান্ত নেয় এই ব্যবসা করা যাবে না। এবং বন্ধু যদুকে সেই কথা জানিয়ে দেয়। 

এদিকে যদু একাকী একটি গাভী নিয়ে দুধ ব্যবসা  শুরু করে দেয়। দুধ বিক্রি করে লাভ করতে থাকে।  ধীরে ধীরে গভীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ব্যবসা বড় হতে থাকে। এক সময় এক বড় ডেয়ারিতে পরিণত হয়। 

লোক মুখে যদুর ব্যবসার গল্প প্রচার হতে থাকে। একদিন মধু ও যদু পরস্পরের সঙ্গে দেখা হয়। পুরানো অভ্যাস মত। পরস্পরের নিজের কথা ও পরিবারের কথা নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে মধু যাদুর কাছে জানতে চাই। বন্ধু - আমি অবাক হচ্ছি ! ব্যবসাতে তোমার  এতটা উন্নতি হল কিভাবে ? যদু বলে ওঠে - বন্ধু। শুরু থেকে আমার বিশ্বাস ছিল। ব্যবসাটা ভালো। এক দিন না একদিন এই ব্যবসাতে উন্নতি করবই। এই মানসিকতা বা মাইন্ডসেট নিয়েই দুধের ব্যবসাটা শুরু করে ছিলাম। অন্য দিকে তুমি শুরুতেই হার স্বীকার করে নিয়েছিলে। এটাই তোমার এবং আমার মধ্যে মানসিকতা বা মাইন্ডসেটের ফারাক। 

বন্ধুরা আপনারা কিভাবে দেখছেন বিষয়টা??

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ